ইনশাআল্লাহ মানে কি?
বাংলায় ইনশাআল্লাহ আর ইংরেজিতে Insha-Allah হলো একটি আরবী শব্দ এটা আমরা সবাই জানি । আরবী إِنْ شَاءَ ٱللَّٰهُ বা, ইনশাআল্লাহ মানে হলো 'যদি আল্লাহ্ চান'। তবে ইনশাআল্লাহ শব্দটির এর আরো কয়েকটি সমার্থক অর্থ হলো 'যদি আল্লাহ্ রাজি থাকেন', 'যদি আল্লাহ্ পাকের মর্জি হয়', 'মহান আল্লাহ্ চাহেন তো' , 'যদি আল্লাহ ইচ্ছা করেন' ইত্যাদি। আল্লাহর ওপর গভীর বিশ্বাস ও পরম নির্ভরতার আরেক নাম হলো ইনশাআল্লাহ।
Table of Contents
ইনশাআল্লাহ নিয়ে আমরা ইস্তেগফার ব্লগ আরো একটি পোস্ট এ বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি চাইলে নিচের লিংক থেকে পোস্ট টি পরে আসতে পারেন।ইনশাআল্লাহ অর্থ কি? ইনশাআল্লাহ নাকি ইংশাআল্লাহ? কোনটি সঠিক?
আজ আমরা এই পোস্ট এর মাধ্যমে ইনশাআল্লাহ নিয়ে আরো কিছু বিস্তারিত তথ্য জেনে নিবো। সেগুলো হলো যেমনঃ
- ইনশাআল্লাহ কেন বলতে হয়?
- ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা
- ইনশাআল্লাহ বলার ফজিলত
- ইনশাআল্লাহ বলার গুরুত্ব
- ইনশাআল্লাহ এর তাৎপর্য
ইত্যাদি এসকল কিছু। ত চলুন শুরু করি একে একে।
ইনশাআল্লাহ কেন বলতে হয়?
'ইনশাআল্লাহ' বলা কেন জরুরী? ইনশাআল্লাহ কেন বলতে হবে? ভবিষ্যতে কোন কাজ করার পরিকল্পনা নেয়ার জন্য, কোথাও যাওয়া, আসা, কারো সাথে কোন কিছুর ওয়াদা করা ইত্যাদি সকল কাজে ইনশাআল্লাহ বলতে হয়। এখন স্বাভাবিকভাবেই মনে প্রশ্ন আসতে পারে - ইনশাআল্লাহ কেন বলতে হয়? এর উত্তরে বলতে চাই - ইনশাআল্লাহ বলা মহান আল্লাহ্র নির্দেশনা। পবিত্র কুরআনের সূরা কাহাফ এর ২৩ ~ ২৪ আয়াতের মাধ্যমেই বলা হয়েছে। কুরানে যা বলা হয়েছে তা একজন মুমিন মুসলিমের জন্য ফরজ।
একজন মুমিন মুসলমান এর ইহকাল পরকালে 'ইনশাআল্লাহ' অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাকের ইচ্ছা ছাড়া আর কিছুই ঘটে না। কখন কি ঘটবে তা একমাত্র আল্লাহ্ ই ভাল জানেন। মহান আল্লাহ্র ইচ্ছাতেই সবকিছু। আল্লাহই চূড়ান্ত পরিকল্পনাকারী, উত্তম ফায়সালাকারী। সব কিছুর মূলেই রয়েছে মহান আল্লাহ্ পাকের ইচ্ছা, মর্জি, এক কথায় ইনশাআল্লাহ।
নবী-রাসুলগণের জীবনেও রয়েছে ইনশাআল্লাহ এর ব্যবহার। শেষ নবীর উম্মত হিসেবে দুনিয়া ও আখিরাতে যে কোন কাজের পরিকল্পনা নিতে ইনশাআল্লাহ বলা প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর উপর ফরজ।
ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা
ইনশাআল্লাহ নিয়ে নবী-রাসুলগণের জীবনে বেশ কিছু ঘটনা আছে যা আমাদের জন্য পাথেয় এবং অনুপ্রেরণা। ‘ইনশা আল্লাহ’ শব্দটি বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে পবিত্র কোরআনে ৬ বার এসেছে। আর হাদিসে অনেক জায়গায় ব্যবহৃত হয়েছে। এখানে আমরা বিভিন্ন যুগে যুগে নবী-রাসুলগণের জীবনে ইনশাআল্লাহ নিয়ে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা নিয়ে আলোকপাত করবো... ইনশাআল্লাহ।
ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা: সূরা কাহাফ ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনে ইনশাআল্লাহ নিয়ে ঘটেছিল এক বিস্ময়কর ঘটনা। যেটির উপর ভিত্তি করে নাযিল হয়েছিল সূরা কাহাফ।
একদিন মক্কার কাফির'রা নাযার ইবনে হারিস ও উকবাহ ইবনে মুঈত কে মদিনায় ইহুদি জ্ঞানীদের নিকট পাঠিয়েছিলেন। আর বলেছিলেন, “আপনারা মুহাম্মাদ (স:) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করুন, এবং তাদের কাছে তাকে বর্ণনা করুন। তিনি কি বলছেন তা তাদের বলুন। ইহুদী পন্ডিতরা বললো, ‘আপনারা আবদুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ (পড়ুন সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে তিনটি বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করুন; সে তিনটি প্রশ হলোঃ
- প্রথম প্রশ্নঃ প্রাচীন যুগে যুবকদের সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করুন। তাদের গল্পটি কি ছিল? একটি অদ্ভুত এবং বিস্ময়কর গল্প আছে।
- দ্বিতীয় প্রশ্নঃ একজন ব্যক্তির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করুন। যিনি ভ্রমণ করে পৃথিবীর পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে পৌঁছেছিলেন। তাঁর গল্পটি কী ছিল? এবং...
- তৃতীয় প্রশ্নঃ তাঁকে জিজ্ঞাসা করুন তিনি রুহ বা আত্মা কি?
সে যদি এই ৩টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারে তাহলে বুঝবে সে আল্লাহর রাসুল।
আর উত্তর দিতে না পারলে বুঝবে সে মিথ্যা নব্যুয়ত এর দাবী করছে। সুতরাং আপনি তাঁকে যেমন উপযুক্ত দেখেন তেমন আচরণ করুন। নাযার ইবনে হারিস ও উকবাহ ইবনে মুঈত মক্কায় ফিরে এলেন এবং বললো, হে লোকেরা! আমরা আপনাদের নিকটে একটি সিদ্ধান্তমূলক সমাধান নিয়ে এসেছি। এর মাধ্যমেই আপনার ও মুহাম্মদ (স:) এর মধ্যে সমস্যার অবসান ঘটাবে। ইহুদি পন্ডিত রা তাকে আমাদের কে কিছু বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে বলেছেন। তারা সেগুলি তাদের জানিয়েছিল। অতঃপর কাফির'রা রাসূলুল্লাহ (স:)- এর কাছে এসে সেই প্রশ্ন তিনটি উথ্যাপন করলেন।
রাসূলুল্লাহ (স:) বললেন: "তুমি আমাকে যা বলেছ তা সম্পর্কে আমি তোমাকে আগামীকাল বলবো"। কিন্তু তিনি ইনশাআল্লাহ বলতে ভুলে গেলেন। ফলে পরের দিন ওহি আসেনি; একাধারে কয়েক দিন ওহি বন্ধ থাকে।
আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওহী ব্যতীত কখনও কোন কিছু বলতেন না। নিজের মনগড়া কিছুই বলতেন না। সুতরাং এবারও তিনি উক্ত প্রশ্নের উত্তরের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহী নাযিলের অপেক্ষায় রইলেন।
কিন্তু প্রায় দুই সপ্তাহ কেটে যাওয়ার পরওে হযরত জিবরাইল (আ:) তাঁর কাছে কোন ওহী আসলেন না! এদিকে মক্কার লোকেরা তাঁকে সন্দেহ করা শুরু করে দিল। আর বলতে লাগলো, "মুহাম্মদ (স:) পরের দিন আমাদের বলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। আর এখন দুই সপ্তাহ কেটে গেছে কিন্তু আমাদের জিজ্ঞাসা করা প্রশ্নের জবাবে তিনি আমাদের এখনো কিছু বলেননি।”
আল্লাহ্র নবী রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ওহী আসতে দেরি হওয়ায় দুঃখ পেয়েছিলেন। এদিকে মক্কার লোকেরা তাঁর সম্পর্কে যা বলেছিল তাতে আরো মন খারাপ হয়ে গেলো।
অবশেষে হযরত জিবরাঈল (আঃ) আগমন করলেন অহী নিয়ে। অবতীর্ন হলো সেই সুরা কাহফ। যেখানে ছিল সেই তিনটি প্রশ্নের উত্তর। ভবিষ্যতে কিছু করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় ইনশাআল্লাহ বলেই আল্লাহ্র উপর তাওয়াক্কুল করতে হবে। ভবিষ্যতে কিছু করার সিদ্ধান্ত নির্ধারণ করা সর্বদা আল্লাহর ইচ্ছাকেই প্রাধান্য হিসেবে গণ্য করতে হবে। তিনিই একা জানেন যে কী ছিল এবং কী ঘটেছিল অতীতে কিংবা কী হবে না হবে ভবিষ্যতে।
ইনশাআল্লাহ - বলতে ভুলে যাওয়াতে আল্লাহপাকের হাবিব প্রিয় বান্দা রাসুল্লাহ (স:)-কেও ছাড় দেয়া হয়নি। ‘ইনশাআল্লাহ’ না বলার কারণে যদি রাসুল্লাহ (স:)- এর উপর এত রাগ করতে পারেন আর আমরা হাজার লক্ষ মহাসমুদ্র পরিমান গুণা নিয়েও যদি ‘ইনশাআল্লাহ’ না বলি তাহলে আল্লাহ আমাদের উপর কি পরমিান রাগ করবেন? একমাত্র আল্লাহপাকই ভালো জানেন।
Istighfar Blog থেকে আরো পড়ুন...
ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা: হযরত সুলায়মান (আঃ)
হযরত সুলায়মান (আঃ) এর জীবনেও রয়েছে ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা। একবার তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন বা, মনে মনে নিয়ত করলেন যে, রাত্রিতে আমি আমার সকল স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হব। যাতে প্রত্যেকের গর্ভ থেকে একটি করে নেক পুত্র সন্তান জন্মগ্রহণ করে। আর পরে তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। কিন্তু এ সময় তিনি ‘ইনশাআল্লাহ’ বলে নিয়ত করতে ভুলে গেলেন। আল্লাহ্র নবীর এ ভুলটি মহান আল্লাহ তায়াআলার কাছে পছন্দ হলো না। ফলস্বরুপ মাত্র একজন স্ত্রীর গর্ভ থেকে একটি অপূর্ণাঙ্গ ও মৃত শিশু ভূমিষ্ট হলো।
- - - [মুত্তাফিকুন আলাইহি; মিশকাত হাদিন নং ৫৭২০]।
এ প্রসংঙ্গে মহান আল্লাহ তায়ালা আরো বলেনঃ
"আমি তো সুলায়মানকে পরীক্ষা করলাম আর তার সিংহাসনের উপর রেখে দিলাম একটি নিষ্প্রাণ দেহ। অতঃপর সে আমার অভিমুখী হইলো।
- - - [সূরা ছোয়াদ, আয়াত-৩৪]।
আশাকরি বুঝতে পারছেন ইনশাআল্লাহ এর শক্তি কতটুকু! শুধুমাত্র ইনশাআল্লাহ না বলায় সুলায়মান (আঃ) এর যে ইচ্ছা পূরণ হয়নি৷
ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা: হযরত মুসা (আঃ)
হযরত মুসা আলাইহিস সালাম এর জীবনী থেকে ইনশাআল্লাহ এর দুইটি ঘটনা সম্পর্কে জানা যায়। সেগুলো আমরা নিচের আলোচনা থেকে জেনে নিবো ইনশাআল্লাহ। তো চলুন জেনে নিই হযরত মুসা আঃ এর জীবনী থেকে ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা গুলো।
ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা: হযরত মুসা (আঃ); ঘটনাঃ ০১
ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা নিয়ে হযরত মুসা সাঃ এর জীবনী থেকেও একটি ঘটনা জানা যায়। হযরত মুসা (আঃ) একদিন আল্লাহ্র কাছে জানতে চাইলেন 'হে আল্লাহ্! আপনার দুনিয়ায় আমার চাইতে কি কেউ আর নেক্কার বান্দা আছে? আমিতো আপনার প্রেরিত রাসুল'। মহান আল্লাহ্ মুসা আঃ কে খিজির আঃ এর কথা জানালেন। আর মুসা আঃ জ্ঞান অর্জনের লক্ষ্যে আল্লাহ্র কাছে খিজির (আ.)-এর শিষ্যত্ব গ্রহণ করার ইচ্ছা করলেন। মহান আল্লাহ্ তা কবুল করলেন। মুসা আলাইহিস সালাম খুঁজে বের করলেন খিজির আঃ কে। মুসার ইচ্ছার কথা শুনে তখন খিজির (আ.) জবাবে বলেন, ‘আমি নিশ্চিত যে আমার সঙ্গে থাকার ধৈর্য আপনার নেই। ’ এ কথার জবাবে মুসা (আ.) বলেন, ‘ইনশাআল্লাহ (আল্লাহ চাইলে), আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন এবং আপনার কোন আদেশ আমি অমান্য করব না।’ - - -[সুরা কাহফ, আয়াত : ৬৭-৬৯]।
ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা: হযরত মুসা (আঃ); ঘটনাঃ ০২
ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা নিয়ে মুসা আঃ এর জীবনী থেকে ২ং ঘটনা হলো বনী ঈসরাইলের কোন এর যুবক চাচা ও বাতিজার। সূরা বাকারা তে এসেছে ইনশাআল্লাহ নিয়ে এই ঘটনাটি।
অগাধ সম্পত্তির লাভের আশায় একমাত্র চাচাত বোনকে বিবাহ করে। কিন্তু চাচা সম্পদ প্রদানে রাজি না হওয়ায় গোপনে তাকে হত্যা করে। আবার নিজেই বাদী সেজে হযরত মুসা (আঃ) এর নিকট বিচার পেশ করে। হযরত মুসা (আঃ) মহান আল্লাহ তায়ালার নির্দেশনা মোতাবেক ফায়সালা দিলেন। তিনি বলেন যে, তোমরা একটি গাভী জবাই করে নাও। জবাইকৃত গাভীর এক টুকরো গোশত দ্বারা মৃতের শরীরে আঘাত করো। কওমের লোকেরা গাভীর রং, ধরন ও আকৃতি ইত্যাদি সম্পর্কে কয়েক দফা জিজ্ঞাসা করে সর্বশেষ বলল,
وَإِنَّا إِن شَاء اللَّهُ لَمُهْتَدُونَ
অর্থ: ‘ইনশা আল্লাহ’ এবার আমরা অবশ্যই সঠিক দিশা পেয়ে যাব।’
- - - [সূরা: বাকারা; আয়াত ৬৭-৭১]।
- - -অতঃপর তারা নির্দেশিত বৈশিষ্টের গাভী পায় এবং তা জবেহ করে হত্যাকারীকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়।
ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা: কুরবানি - হযরত ইবরাহিম (আঃ) ও ইসমাঈল (আঃ)
ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা এবার আমরা জানবো কুরবানি - হযরত ইবরাহিম (আঃ) ও ইসমাঈল (আঃ) এর ঘটনা। মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর জীবনের অন্যতম একটি পরীক্ষা ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা। আমাদের সবার তো কোরবানির ঐতিহাসিক ঘটনা জানা আছে। আল্লাহ্র রাসুল হযরত ইবরাহিম (আঃ) যখন তার ১৩/ ১৪ বছরের কলিজার টুকরা শিশুপুত্র হযরত ইসমাঈল (আঃ)-কে ডেকে বললেন, ‘হে আমার বৎস! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আমি তোমাকে কুরবানি (জবাই) করছি। এবার তুমি চিন্তা করে বলো, এ নিয়ে তোমার অভিমত কী?’ এমন ভয়ঙ্কর স্বপ্নের কথা শুনেও হযরত ইসমাঈল (আঃ) স্বাভাবিক ভাবেই বললেন, “আমার প্রিয় আব্বাজান! আপনি সেটাই করুন। ‘ইনশাআল্লাহ’ আপনি আমাকে ধৈর্যশীল হিসেবে পাবেন।
- - -[সুরা সাফফাত; আয়াত : ১০২]।
ইনশাআল্লাহ এর ঘটনা শুধু উপরে উল্লেখিত গুলোই নয়! আল্লাহর নবী ইয়াকুব, শোয়াইব আঃ দের জবানেও ইনশাআল্লাহ শব্দের ব্যবহার দেখা যায়। কথা বলার সময় তারা ‘ইনশাআল্লাহ’ ব্যবহার করেছেন।
Istighfar Blog থেকে আরো পড়ুন...
ইনশাআল্লাহ বলার গুরুত্ব
ইনশাআল্লাহ বলার গুরুত্ব অনেক। ভবিষ্যতের কোন কাজের পরিকল্পনাতে ইশনাআল্লাহ যুক্ত থাকলে সেই কাজে সফলতা ও নিশ্চয়তা অনেক বেড়ে যায়। নবী-রাসুলগণ দের জীবনী অনুসন্ধান করলেও ইনশাআল্লাহ এর গুরুত্ব অনুধাবন করা যায়। সুতরাং ইনশাআল্লাহ এর গুরুত্ব কথায় বলে শেষ করা যায় না।
ইনশাআল্লাহ বলার গুরুত্ব প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআনুল কারীমে এরশাদ করেছেনঃ
"‘ইনশাআল্লাহ’ কথাটি না বলে তুমি কখনো কোনো বিষয়ে এ কথা বলো না যে, আমি ওটা আগামীকাল করবো। আর যদি ভুলে যাও তাহলে তোমার রবকে স্মরণ করো এবং বলো, সম্ভবতঃ আমার রব আমাকে এর (গুহাবাসীর বিবরণ) চেয়ে সত্যের নিকটতর পথনির্দেশ করবেন।" - - - [সুরা কাহফ; আয়াত: ২৩ ~ ২৪]।
ইনশাআল্লাহ বলা কত জরুরী তা আশাকরি বুঝতে পারছেন! আল্লাহ তায়ালার সাহায্য ছাড়া, ইচ্ছা ছাড়া কোন কাজই আমাদের দ্বারা করা সম্ভব নয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে নেক আমল করার তাওফিক দিন; ভবিষ্যতের প্রত্যেক উত্তম কাজ সম্পাদনের নিয়তে ইনশাআল্লাহ বলার তাওফিক দান করুন।... আমীন।
ইনশাআল্লাহ বলার তাৎপর্য
ইনশাআল্লাহ বলার তাৎপর্য ও বরকত অপরিসীম। মহান আল্লাহ তায়ালা সবকিছু জানেন; তিনি হলেন সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী। তিনি যা চান, যা ইচ্ছা ও মর্জি হয় তাই করেন। আল্লাহ্ কে বাধ্য করার সাধ্য কারও নেই। আর তিনি কোনো কিছু করতেও বাধ্য নন। প্রকৃত মুমিনের হৃদয়ে এই অটুট বিশ্বাস টুকু থাকে। মহান আল্লাহ্ পবিত্র কুরআনের আয়াতের মাধ্যমে মানবজাতিকে উপদেশ দিয়েছেন। তারা ভবিষ্যতে কোনো কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করলে বা কোনো কিছু অর্জন করতে চাইলে বিষয়টি সম্পাদন হওয়া না-হওয়ার ব্যাপারটি সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর মর্জির ওপর ছেড়ে দেবে এবং বলবে ‘ইনশাআল্লাহ’ অর্থাৎ, ‘আল্লাহ যদি চান’। কেবল আল্লাহ্ চাইলেই হবে, না চাইলে হবেনা। আল্লাহতায়ালা বান্দার সব বিষয়ে পূর্ণ ওয়াকিবহাল। বান্দার ভালো-মন্দের ব্যাপারে পূর্ণ অবগত। তাই বিষয়টি বান্দার জন্য কল্যাণকর হলে তিনি তা সম্পাদন করে দেবেন আর অকল্যাণকর হলে এর থেকে তাকে দূরে সরিয়ে রাখবেন।
ইনশাআল্লাহ্: শেষকথা
ইনশাআল্লাহ্ নিয়ে বেশ কিছু ঘটনা, ইনশাআল্লাহ্ বলার গুরুত্ব এবং ইনশাআল্লাহ্ বলার তাৎপর্য নিয়ে আজকের পোস্ট থেকে আপনি যদি ভাল কিছু জেনে থাকেন তাহলে কমেন্ট এ জানান। আপনার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং নিজেও ইনশাআল্লাহ্ বলার অভ্যাস করুন। মহান আল্লাহ্ আমাদের সহান হোন...আমিন।