আস্তাগফিরুল্লাহ পুরো দোয়াঃ শুরুর কথা
আস্তাগফিরুল্লাহ হলো মহান আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাওয়ার সবচেয়ে সহজ দোয়া। নশ্বর এই দুনিয়ায় আমরা ডুবে আছি পাপের সমুদ্রে। সকাল সন্ধ্যা আমরা যদি ইস্তেগফার ও তওবা এর মাধ্যমে আল্লাহ্র কাছে আস্তাগফিরুল্লাহ বলে মাফ চাই তবেই পরিত্রাণ পেতে পারি। আজকে আমরা ইস্তেগফার ব্লগ -এর এই পোস্ট এর মধ্যমে 'আস্তাগফিরুল্লাহ পুরো দোয়া' এবং ' আস্তাগফিরুল্লাহ এর উপকারিতা' নিয়ে বিস্তারিত জেনে নিবো।
দুনিয়াতে আমরা যতক্ষন বেঁচে আছি আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা। নাজাতের চিন্তা করা। মহান আল্লাহ্ পাকের নৈকট্য লাভের অন্যতম উপায় হলো সকাল সন্ধ্যা আস্তাগফিরুল্লাহ পড়া, আস্তাগফিরুল্লাহ আমল করা।
সকাল সন্ধ্যার আমল, জিকীর, তওবা, ইস্তেগফার এর মাধ্যমেই আমরা জান্নাত লাভের প্রত্যাশা করতে পারি। আর জান্নাত লাভের জন্য সবচেয়ে সহজ ও উচ্চারণে কম সময় লাগে এরকম একটি দোয়া ও জিকীর হচ্ছে ' আস্তাগফিরুল্লাহ'।
আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি?
আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থ কি? আস্তাগফিরুল্লাহ শব্দের অর্থ কি? এটি একটি আরবী শব্দ। আরবী তে استغفر الله এর বাংলা উচ্চারণ হলো 'আস্তাগফিরুল্লাহ' যার অর্থ হলো 'আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা চাওয়া, মাফ চাওয়া, তওবা করা'।
সহজ বাংলায় অনুবাদ করলে আস্তাগফিরুল্লাহ শব্দের বাংলা অর্থ দাঁড়ায় 'আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।' জানা অজানা, ইচ্ছাকৃত অনিচ্ছাকৃত সকল ভুলের জন্য আমরা আল্লাহ্র কাছে 'আস্তাগফিরুল্লাহ' দোয়াটি আমল করে ক্ষমা প্রার্থনা করি।
মহাগ্রন্থ আল কোআনুল কারীমে মহান আল্লাহ্ তা'য়ালা এরশাদ করেছেনঃ
وَسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلا ,يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اذْكُرُوا اللَّهَ ذِكْرًا كَثِيراً -
- - - হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ্ কে বেশি বেশি স্মরণ করো; সকাল ও সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা বর্ণনা করো।’
- - - [সূরা: আহযাব, আয়াত ৪১-৪২]
ইহকাল ও পরকাল দুই কূলে নাজাত পেতে আল্লাহ্র কাছে তওবা করার জন্য নিয়মিত 'আস্তাগফিরুল্লাহ' পড়া একজন মুমিন মুসলমানের গুরু দায়িত্ব।
আস্তাগফিরুল্লাহ পড়লে কি হয়?
আস্তাগফিরুল্লাহ পড়লে কি হয়? আস্তাগফিরুল্লাহ...
যে ব্যক্তি নিয়মিত ইস্তিগফার করবে অর্থাৎ আস্তাগফিরুল্লাহ আমল করবে; আল্লাহ তার সব সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন। সব দুশ্চিন্তা দূর করে দেবেন আর অকল্পনীয় উৎস থেকে তার রিযিকের ব্যবস্থা করে দেবেন। (সুবহানাল্লাহ!)
- - - [আবূ দাউদ ১৫২০] ।
আসতাগফিরুল্লাহ কখন পড়তে হয়? কখন বলতে হয়?
আসতাগফিরুল্লাহ সব সময় পড়া যায়। সব সময় বলা যায়। সব সময় আমল করা যায়। আসতাগফিরুল্লাহ শব্দের অর্থ আমি মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। অনাকাঙ্ক্ষিত কোন অন্যায় বা গুনাহ হয়ে গেলে আমরা আসতাগফিরুল্লাহ বলব, পড়বো , আমল করবো।
আস্তাগফিরুল্লাহ পুরো দোয়া
আস্তাগফিরুল্লাহ পুরো দোয়া নিচে দেয়া হলো।
আস্তাগফিরুল্লাহ পুরো দোয়াঃ
- - - আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি জাম্বিওঁ ওয়া আতুবু ইলাইহি; লা হাওলা ওয়া লা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।
আস্তাগফিরুল্লাহ পুরো দোয়া বাংলা অর্থসহঃ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই আমার সকল গুনাহের, আমি তাঁর কাছে ফিরে আসি। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া গুনাহ থেকে বাঁচানোর ও নেক কাজ করার কোনো শক্তি নেই।
- - - [মুসলিম ও তিরমিজি শরীফ]।
প্রশ্নঃ আস্তাগফিরুল্লাহ রাব্বি মিন কুলি জাম্বি ওয়াতুবু ইলাহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহিল আলিয়ুল আজিম - এটি কোন সুরার আয়াত?
- - - উত্তরঃ এই প্রশ্ন টি অনেকেই করে থাকেন। আস্তাগফিরুল্লাহ রাব্বি মিন কুলি জাম্বি ওয়াতুবু ইলাহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহিল আলিয়ুল আজিম- এটি পবিত্র কুরআনের কোন সুরার আয়াত?
- - - এটি আসলে পবিত্র কুরআনের কোন আয়াত নয়! তবে হ্যাঁ - আস্তাগফিরুল্লাহ -শুধুমাত্র এই অংশ টি পবিত্র কুরআনুল কারীমে আছে [সূরা কাহফ ]। বাকি অংশ টুকু পবিত্র হাদীসের বানী।
আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া বাংলা উচ্চারণ
আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া বাংলা উচ্চারণ
আস্তাগফিরুল্লাহ ওয়া আতূবু ইলাইহি।
- - - বুখারী [ফাতহুল বারীসহ] ১১/১০১, নং ৬৩০৭; মুসলিম ৪/২০৭৫, নং ২৭০২।
আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া বাংলা অর্থঃ আমি আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর নিকটই তাওবা করছি
আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া আরবি
আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি
أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া বাংলা অর্থঃ আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।
আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া মূল আরবীঃ
أَسْتَغْفِرُ اللهَ العَظِيْمَ الَّذِىْ لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَأَتُوبُ إِلَيْهِ
আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া বাংলা উচ্চারণঃ
‘আসতাগফিরুল্লা-হাল আ’যীমাল্লাযী লা- ইলা- হা ইল্লা হুওয়াল হা’ইয়ুল ক্বাইয়ূমু ওয়া আতুবু ইলাইহি।’ - - -
অর্থঃ আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ছাড়া ইবাদতের আর কোন যোগ্য উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও চিরস্থায়ী। আমি তাঁর কাছে তাওবা করছি।
লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ অর্থ: মহান আল্লাহর সাহায্য ও সহায়তা ছাড়া আর কোন আশ্রয় ও সাহায্য নেই। শয়তানের কোন ওয়াসওয়াসা বা দুরভিসন্ধিমূলক কোন প্রতারণা থেকে বাঁচার জন্য এটি পড়া উচিত।
আস্তাগফিরুল্লাহ রাব্বি মিন কুল্লি দোয়া আরবি
আস্তাগফিরুল্লাহ পুরো দোয়ার আরবি উচ্চারণঃ
আস্তাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি জাম্বিওঁ ওয়া আতুবু ইলাইহি; লা হাওলা ওয়া লা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।’
আস্তাগফিরুল্লাহ পুরো দোয়ার আরবি উচ্চারণঃ
আস্তাগফিরুল্লাহ পুরো দোয়াটির বাংলা অর্থ সহ নিচে দেয়া হলো।
আস্তাগফিরুল্লাহ পুরো দোয়াটির বাংলা অর্থঃ
আস্তাগফিরুল্লাহ পুরো দোয়ার বাংলা অর্থ: আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই আমার সব পাপের, আমি তাঁর কাছে ফিরে আসি। আল্লাহর সাহায্য ছাড়া গুনাহ থেকে বাঁচার ও নেক কাজ করার কোনোই শক্তি নেই। (মুসলিম ও তিরমিজি)।
আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম
আস্তাগফিরুল্লাহ যে কোন সময় পড়া যায়। মহানবী সাঃ প্রতি ফরজ নামাজের সামাল ফিরিয়ে তিনবার আস্তাগফিরুল্লাহ পড়তেন (-মুসনাদে আহমদ: ২২৪০৮)।
আল্লাহ্র প্রিয় হাবীব মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
"আল্লাহর কসম, আমি দিনের মধ্যে ৭০ বারেরও বেশি ইস্তিগফার করি (আল্লাহতায়ালার কাছে ক্ষমা চাই) এবং তওবা করি।'
– - - [ সহীহ বুখারি: ৫/২৩২৪ ]
‘সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি, আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।’ হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) দোয়াটি খুব বেশি বেশি পড়তেন। এমনকি হজরত রাসূলে কারিম (সা.)-এর ইন্তেকালের আগেও এই দোয়াটা অনেকবার করেছেন।
---সহিহ মুসলিম: ৪৮৪
সুতরাং মহান আল্লাহ তায়ালার প্রিয় বান্দা হতে এবং রাসুলের প্রিয় উম্মত হতে হলে মুমিন মুসলমান এর আস্তাগফিরুল্লাহ জিকীর ও আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া নিয়মিত পড়তে হবে, আমল করতে হবে। আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ার নিয়ম এটাই।
"আস্তাগফিরুল্লাহ..." শব্দটা ছোট এবং বলতে সহজ। কিন্তু এক সেকেন্ডে অতিতের সমস্ত গুনাহ মুছে দিতে পারে।🌸
আস্তাগফিরুল্লাহ তওবা দোয়া
যে কোন কিছুর বিনিময়ে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই হলো একজন মুমিন মুসলমান এর ইহ-জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর মহান আল্লাহর এই সন্তুষ্টি অর্জনের পথে মূল অন্তরায় হলো আমাদের গুনাহ ও পাপ সমূহ। সকল পাপ ও গুনাহ থেকে মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাওয়ার বা ইস্তিগফারের সবচেয়ে ছোট কিন্তু আমল নামায় অনেক ভারী দোয়াটি হলো 'আস্তাগফিরুল্লাহ তওবা দোয়া'।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ বলেছেন:
" বাম কাঁধের ফেরশতা গুনাহ করা একজন মুসলিম ও ঈমানদার বান্দাকে ছয় ঘন্টা সময় দেয়। সেই বান্দা যদি মন থেকে আন্তরিকতার সাথে তওবা করে আস্তাগফিরুল্লাহ পড়ে নেয় এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, তবে ফেরেশতা তা লিপিবদ্ধ করেনা। আর যদি সেই বান্দা আল্লাহর কাছে ক্ষমা না চায়, তবে ফেরেশতা তা শুধুমাত্র একবার লিপিবদ্ধ করে।" (মুসলিম)
সুতরাং যখনই আমরা কোন গুনাহ করে ফেলি মনের অজান্তে কিংবা শয়তানের প্ররোচনায় পড়ে হোক তখনই সাথে সাথে 'আস্তাগফিরুল্লাহ তওবা দোয়া' পড়ে নিতে হবে।
আস্তাগফিরুল্লাহ লেখা ছবি
নিচে কয়েকটি আস্তাগফিরুল্লাহ লেখা ছবি দেয়া হলো।
আস্তাগফিরুল্লাহ লেখা ছবি:
সাইয়েদুল আস্তাগফিরুল্লাহ
সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ইস্তেগফার, সবচেয়ে বড় ইস্তেগফার বা তওবা হলো 'সাইয়েদুল ইস্তেগফার' বা, সাইয়েদুল আস্তাগফিরুল্লাহ ।
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ، وَأَبُوءُ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لاَ يَغْفِرُ الذُّنوبَ إِلاَّ أَنْتَ
সাইয়েদুল আস্তাগফিরুল্লাহ এর বাংলা উচ্চারণ সহ নিচে দেয়া হলো।
আল্লা-হুম্মা আনতা রব্বী লা ইলা-হা ইল্লা আনতা খলাক্বতানী ওয়া আনা ‘আব্দুকা, ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাস্তাত্বা‘তু। আ‘উযু বিকা মিন শাররি মা সানা‘তু, আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়্যা, ওয়া আবূউ বিযাম্বী। ফাগফির লী, ফাইন্নাহূ লা ইয়াগফিরুয যুনূবা ইল্লা আনতা
সাইয়েদুল আস্তাগফিরুল্লাহ এর বাংলা অনুবাদ সহ নিচে দেয়া হলো।
হে আল্লাহ! আপনি আমার রব্ব, আপনি ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আমি আপনার বান্দা। আমি আমার সাধ্য মতো আপনার (তাওহীদের) অঙ্গীকার ও (জান্নাতের) প্রতিশ্রুতির ওপর রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় চাই। আপনি আমাকে যে নেয়ামত দিয়েছেন আমি তা স্বীকার করছি এবং আমার অপরাধও স্বীকার করছি। অতএব, আপনি আমাকে মাফ করে দিন। নিশ্চয় আপনি ছাড়া পাপরাশি ক্ষমা করার কেউ নেই
ইমাম বুখারী (৬৩০৬) শাদ্দাদ বিন আওস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন; তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার বা, সাইয়েদুল আস্তাগফিরুল্লাহ হলো সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ইস্তিগফার।
তিনি আরো বর্ণনা করেনঃ
যে ব্যক্তি দিনের বেলায় আন্তরিকতার সাথে দৃঢ় ঈমাণ নিয়ে সাইয়েদুল ইস্তেগফার বা, সাইয়েদুল আস্তাগফিরুল্লাহ এর বাক্যগুলো বলবে এবং সে দিন সন্ধ্যার আগে মারা যাবে সে ব্যক্তি জান্নাতের অধিবাসী হবে।
আর যে ব্যক্তি রাতের বেলায় আন্তরিকতার সাথে দৃঢ় ঈমাণ নিয়ে সাইয়েদুল ইস্তেগফার বা, সাইয়েদুল আস্তাগফিরুল্লাহ এর বাক্যগুলো বলবে এবং সকাল হওয়ার আগে মারা যাবে সে ব্যক্তি জান্নাতের অধিবাসী হবে।
আমাদের জন্য প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যার যিকির করার ক্ষেত্রে সাইয়েদুল আস্তাগফিরুল্লাহ হবে নাজাতের বড় একটি হাতিয়ার।
আস্তাগফিরুল্লাহ এর উপকারিতা
সকাল-সন্ধ্যায় আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া টি পড়ার অনেক ফযিলত রয়েছে। আস্তাগফিরুল্লাহ এর উপকারিতা ও গুরুত্ব অনেক।
ইস্তেগফার আকাশ জুড়ে ছেয়ে থাকা মেঘের মতো! যতবেশি আপনি ইস্তেফার আমল করবেন, আপনার উপর ততবেশি রিযিকের বৃষ্টি; প্রশান্তির বৃষ্টি বর্ষিত হতে থাকবে!!
আস্তাগফিরুল্লাহ এর অডিও শুনুনঃ
আস্তাগফিরুল্লাহ এর উপকারিতা নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ হাদিস আছে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
যে ব্যক্তি ‘আস্তাগফিরুল্লাহিল আজিম, আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল কাইয়ুমু ওয়া আতুবু ইলাইহি’ দোয়াটি পাঠ করবে, সে জিহাদের ময়দান হতে পলায়ন করলেও তাকে ক্ষমা করা হবে।
- - – সুনানে আবু দাউদ: ১৫১৭
আস্তাগফিরুল্লাহ এর উপকারিতা নিয়ে আরো একটি হাদিস জেনে নিই। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেনঃ
আমি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর চেয়ে আর কাউকে অধিক পরিমাণে এই ইস্তিগফার বলতে শুনিনি ‘আস্তগফিরুল্লাহা ওয়াআতুবু ইলাইহি’।
- - - [নাসায়ি: ১০২১৫]।
আস্তাগফিরুল্লাহ এর আরো উপকারিতা জেনে নিই লিস্ট আকারে।
আস্তাগফিরুল্লাহ এর উপকারিতা'র মধ্যে অন্যতম হলো-
- আস্তাগফিরুল্লাহ --- মহান আল্লাহ্র কাছে অনেক প্রিয় একটি আমল।
- আস্তাগফিরুল্লাহ --- এর জন্য প্রচুর রহমত ও বৃষ্টি হয়; বাগান ও শস্যে ভালো ফসল ফলে, নদী-নালা থাকে জীবন্ত।
- আস্তাগফিরুল্লাহ --- যে বেশি বেশি আমল করে আল্লাহ তাঁকে উত্তম সন্তান, সম্পদ ও জীবিকা দান করেন।
- আস্তাগফিরুল্লাহ --- মহান আল্লাহ্ পাকের নৈকট্য লাভ করা যায়।
- আস্তাগফিরুল্লাহ --- ইবলিশ শয়তান কে দূরে রাখে।
- আস্তাগফিরুল্লাহ --- ঈমানদার এর জীবনে দুশ্চিন্তা ও পেরেশানি দূর করে।
- আস্তাগফিরুল্লাহ --- বেশি বেশি আমলকারী কিয়ামতের দিন আরশের ছায়াতলে থাকবে।
- আস্তাগফিরুল্লাহ --- আমলকারীর জন্য মৃত্যুর সময় ফেরেশতারা সুসংবাদ নিয়ে আসবে।
- আস্তাগফিরুল্লাহ --- মুস্তাজাবুদ দাওয়াহ (যার দোয়া কবুল হয়) লাভ করা যায় ।
আস্তাগফিরুল্লাহ অর্থাৎ ইস্তেগফার নিয়ে ইমাম হাম্বল ও মুস্তাজাবুদ দাওয়াহ এর একটি শিক্ষণীয় ঘটনা পড়ে নিনঃ
দোয়া কবুলের গল্প । মুস্তাজাবুদ দাওয়াহ
"আস্তাগফিরুল্লাহ" সবচেয়ে ছোট ইস্তেগফার..কিন্তু অনেক শক্তিশালী। আস্তাগফিরুল্লাহ এর উপকারিতা স্বরুপ আমাদের প্রিয় নবী রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেছেন:
সু-সংবাদ তার জন্য, যার আমলনামায় অধিক ইস্তেগফার পাওয়া যাবে।’
--- (ইবনে মাজাহ হাদিস নং ৩৮০৮)।
নির্ভেজাল একটি ইবাদত হলো আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়া নিয়মিত আমল করা। জান্নাত লাভের অন্যতম সিঁড়ি হল আস্তাগফিরুল্লাহ দোয়াটি।
দোয়া কবুল হচ্ছে না? বেশি বেশি ইস্তেগফার / আস্তাগফিরুল্লাহ পাঠ করুন; ইনশাআল্লাহ... দোয়া কবুল হয়ে যাবে।
আশাকরি আস্তাগফিরুল্লাহ পুরো দোয়া এবং আস্তাগফিরুল্লাহ এর উপকারিতা পোস্ট থেকে ভাল কিছু জেনেছেন। মহান আল্লাহ আমাদের আমল গুলো কে আমাদের নাজাতের উচিলা করে দিন। নিয়মিত ইস্তেগফার ও আস্তাগফিরুল্লাহ আমল এর মাধ্যমে আমাদের ইহকাল ও পরকাল দুই কালেই মুক্তি দান করবেন। আপনার কোন মন্তব্য থাকলে কমেন্ট এ জানাতে ভুলবেন না। ইস্তেগফার ব্লগ এর সাথেই থাকুন! সুন্দর হোক আপনার আমার ইসলামিক জীবন। এই কামনায়...।